শীতকালীন ভাইরাস কি কি - নিপা ভাইরাস কেন হয় ।
বাংলাদেশের শীত মৌসুম চলে এসেছে। তাই শীতকে উপেক্ষা করে গ্রামীন অঞ্চলে বেশ ঠান্ডা পড়েছে গরমের তুলনায় শীতকাল অনেকেই স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন। এ সময় বাড়তে কিছু রোগব্যাধি দেখা যায় বিশেষ করে জ্বর ঠান্ডা জনিত সমস্যা।
শিশু ও বয়স্কদের জন্য এই সময়টা বেশ জটিলতা তৈরি করে। শীতকালে যে সমস্যা গুলো দেখা যায় এবং ভাইরাস গুলো কি কি? বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করছি এই পোস্টটিতে একটু সময় নিয়ে পড়লে অনেক কিছুই অজানা তথ্য জানতে পারবেন।
ভূমিকা
শীতকালে সাধারণত সর্দি-কাশি অ্যাজমা এই ধরনের রোগ গুলো বাড়ে । আদ্রতা চেঞ্জ হয় ধুলাবালি বাতাসে উড়ে তাই শীতকালে এ ধরনের রোগ থেকে বাঁচতে হলে অনেক সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। শীতকাল আর গ্রীষ্মকালীন থেকে অনেকটা আলাদা একটা আবহাওয়া তো সেই আবহাওয়ার সাথে নিজেকে তৈরি করতে হবে না হলে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
শীতকালীন ভাইরাস
শীতকালে ভাইরাসের মধ্যে সবচাইতে সহজ লভ্য ভাইরাস হচ্ছে নিপা ভাইরাস। এই ভাইরাসটি শীতকালীন ভাইরাস বলা যায়। বেশ কিছু কারণ রয়েছে শীতের সময় মানুষ অনেক আনন্দ উৎসব করে থাকে বিশেষ করে ফ্যামিলি প্রোগ্রাম আর শীতে খেজুরের রস খাবেন না এরকম মানুষ পাওয়া খুবই মুশকিল। শীতের মৌসুমে প্রচুর গাছ কেটে খেজুরের রস সংগ্রহ করে থাকে এবং এই রস পান করে গুড় তৈরিতে সহায়তা করে।
আরো পড়ুনঃ অ্যালোভেরা জেল
পিঠা তৈরি হয় এবং খেতে অনেক সুস্বাদু হয়ে থাকে শীতকালীন ভাইরাস মূলত খেজুরের রস থেকেই হয়ে থাকে এটা অনেক মারাত্মক একটা ভাইরাস। শরীরের নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে শুরুতে সাধারণ জ্বর, মাথাব্যথা, শরীর ব্যথা, গলা ব্যথাসহ বমির মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারে। রোগটি আরও গভীর হলে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া এবং মস্তিষ্কের প্রদাহ হতে পারে। শীতকালে এই ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
নিপা ভাইরাসের লক্ষণ
নিপা ভাইরাসের বেশ কিছু লক্ষণ আছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে জ্বর মাথাব্যথা বমি বমি ভাব পেশি তে ব্যথা যন্ত্রনা সহ তীব্র শ্বাসকষ্ট সমস্যা দেখা দিতে পারে। নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমণ সাধারণত শীতকালে গাছ থেকে খেজুরের রস সংগ্রহ ও খাওয়া হয় সেই সময়ে হয়ে থাকে ৷ এজন্য অক্টোবর মাস থেকেই সরকারি ও বেসরকারিভাবে ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা করে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে পারলে নিপাহ সংক্রমণ করমিয়ে আনা সম্ভব হতে পারে৷
নিপা ভাইরাস ও খেজুরের রস
নিপা ভাইরাস থেকে বাঁচতে হলে খেজুরের রস খাওয়া যাবে না। এবং যদি খেতে মন চায় তাহলে অবশ্যই এটা পর্যবেক্ষণ করে খেতে হবে নইলে বিপদে পড়তে হবে। ভাইরাস জনিত সমস্যায় এখন প্রশ্ন হলো, খেজুরের রসের তাহলে কী হবে? জনস্বাস্থ্যবিদেরা বলছেন, খেজুরের গুড় খাওয়া যাবে, রস খাওয়া যাবে না।
আরো পড়ুনঃ রাতে এলোভেরা ব্যবহার
খেজুরের রস থেকে তৈরি গুড় খেতে কোনো বাধা নেই, এতে ক্ষতি নেই। রসের গুড় তৈরি হোক। এর চাহিদাও আছে যথেষ্ট। রস দিয়ে তৈরি পিঠা-পায়েস অর্থাৎ আগুনের উত্তাপে রস রান্না হওয়ার পর তৈরি সব খাবার খাওয়া যেতে পারে। কিন্তু কোনোক্রমেই কাঁচা রস খাওয়া যাবে না।
নিপাহ ভাইরাস কিভাবে ছড়ায়
নিপা ভাইরাস মূলত খেজুরের রস পান করলে ছড়ায় এবং আক্রান্ত ব্যক্তি লক্ষণ প্রকাশ পেতে ৪-১৪ দিন আর কখনো কখনো ৪৫ দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারেকোভিডের মতো আমাদের নির্ভর করতে হয় আর. টি-পিসিআরের উপর বাংলাদেশ এবং ভারতের খেজুরের গুড় তৈরি হয়।অনেক খেজুর রস থেকে বাদুড়কে দূরে রাখাও নিপাহ নিয়ন্ত্রণের একটি গুরুত্বপূর্ণ পন্থা।
এজন্য খেজুরের রস সংগ্রহের পাত্রগুলো বাঁশের খাঁচা বা মশারি দিয়ে ঢেকে রাখা জরুরি, যেমন জরুরি খেজুরের রস ভালো করে ফুটিয়ে খাওয়া। কাজেই যারা স্বাস্থ্যসেবার সাথে সম্পৃক্ত তাদের জন্য সাবধানতার মাত্রা আরেক ডিগ্রি বেশি হওয়াটাই বাঞ্ছনীয়। কথায় বলে ‘মনে না জানলে, চোখে দেখা যায় না’।
নিপাহ ভাইরাসের ঔষধ
নিপা ভাইরাস চিকিৎসার জন্য কোন ওষুধ নেই এখন পর্যন্ত আবিষ্কার হয়নি। তবে এটা একটা কোভিড- ১৯ এর কোন অংশে কম নয়। নিপা ভাইরাসের কোন ভ্যাকসিন না থাকায় রোগীকে অনেক ভুগতে হয় বি বিশ্বে নিপা ভাইরাস প্রথম হলেও এটা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে বাদুড়ের লালা থেকে।
আমরা যখন রস খাব তখন অবশ্যই এটা পর্যবেক্ষণ করে খেতে পারলে ভাইরাস থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। আর বেশি ভালো হয় বাজারে নিপা ভাইরাসের কোন ওষুধ এখন পর্যন্ত মিলেনি তবে ঘাবড়ানোর কিছু নেই সতর্কতামূলক ভাবে চললে সুস্থ থাকবেন।
নিপা ভাইরাসের আবিষ্কারক কে
বিশ্বে প্রথম নিপাহ ভাইরাস শনাক্ত হয়েছিল ১৯৯৯ সালে মালয়েশিয়ায় শূকর খামারিদের মধ্যে।পরে এই ভাইরাস বাংলাদেশে শনাক্ত হয় ২০০১ সালে। এরপর জানা যায়, বাদুড়ই নিপাহ ভাইরাস খেজুরের রসে ছড়িয়ে দিয়েছে। খেজুরের রসের হাঁড়িতে বাদুড়ের মল লেগে থাকতে দেখা যায়। আইডিসিআরের তথ্যমতে, ২০০১ থেকে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে নিপাহ ভাইরাসে ৩০৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
আরো পড়ুনঃ এলোভেরা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়
তাদের মধ্যে ২১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। যা মোট আক্রান্তের প্রায় ৭০ শতাংশ।এখন পর্যন্ত নিপাহর সংক্রমণ নওগাঁ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, টাঙ্গাইল, ঠাকুরগাঁও, কুষ্টিয়া, মানিকগঞ্জ, রংপুরসহ দেশের ৩১ টি জেলায় দেখা গেছে। এ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে মস্তিষ্কে ভয়াবহ প্রদাহ দেখা দেয়। এতে রোগী জ্বর ও মানসিক অস্থিরতায় ভোগেন। এক পর্যায়ে খিঁচুনিও দেখা দিতে পারে।
শেষ কথা
আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমি আপনাদের সাথে শীতকালীন ভাইরাস কি কি নিপা ভাইরাস কেন হয় । সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করলাম। আশা করছি এই আর্টিকেলটি আপনাদের অনেক উপকারে এসেছে। এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু বান্ধবের সঙ্গে শেয়ার করবেন। তাদেরও এ বিষয়টি সম্পর্কে জেনে রাখা প্রয়োজন। আর নিত্য নতুন এরকম আপডেট খবর পাওয়ার জন্য আমাদের এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করবেন। ধন্যবাদ।
এনকোয়ারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url